যৌবতী পেত্নীর মন পর্ব : তিন Bangla Golpo

যৌবতী পেত্নীর মন পর্ব : তিন Bangla Golpo

লেখা: নীল সাগর।

● চারিদিকে হালকা আলোর আভা দেখা দিয়েছে, সকাল হয়ে এলো বলে। দিগন্তে আলোর আভা।এই আলোর আভাতে পেত্নী রেনুর শরীর যেন পুড়ে যেতে লাগলো। আর এখানে থাকা যাবে না। আলোতে পেত্নীরা থাকতে পারে না জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। পেত্নী রেনু তার শিশু বাচ্চাকে কোলে নেয়ার চেষ্টা করলো। কিন্তু এ কি? এ তো কোন অশরীরী বাচ্চা না। এ তো দেখি মানব শিশু। কোন শিশু পেত্নী না এটা। একে কিভাবে রেনু নিয়ে যাবে?? রেনুর শরীর জ্বলছে। এখনি এখান থেকে না বের হলে সূর্যের আলোতে সে জ্বলে মরবে।নিজের সন্তানকে ফেলে কিভাবে যাবে সে? পেত্নী হোক তবুও তো সে একটা মা। একজন মা তার সদ্যজাত শিশুকে রেখে কিভাবে যাবে? রেনু যেতে পারল না। একটানে নাড়ীটা ছিঁড়ে কয়েদখানার অন্ধকার পরিতাক্ত টয়লেটের ভিতরে প্যানের নিচে যেয়ে নিজের জীবন বাঁচাল সে।এখানে ঘুটঘুটে অন্ধকার। অনায়াশে দিনটুকু এখানে কাটানো যাবে। রেনু পেত্নী ঠিক করলো আবার রাত না হউয়া পযন্ত এখানেই থাকবে সে কিন্তু কিছুতেই নিজের সন্তান কে ফেলে সে যেতে পারবে না।

■ চারিদিকে আলো ফুটেছে। সদ্যজাত শিশুর কান্নার চিৎকারে জেলের সব কয়েদির ঘুম ভেঙ্গে গেলো। দেখেই বোঝা যাচ্ছে শিশুটা কিছুক্ষণ আগেই জন্ম নিয়েছে। এখনো শরীরে চাপ চাপ রক্তের ছাপ। নাড়ীটাও এখনো ভাল করে কাটা হয়নাই। সবাই শিশুটার চারপাশে ভিড় করেছে। সবাই অবাক। এখানে তো কোন মেয়ে কয়েদি নেই।এই শিশু তাহলে কার? কেও কি তাঁর পরিচয়হিন বাচ্চা এখানে ফেলে গেলো? তা কিভাবে সম্ভব? ডাস্টবিনে না ফেলে এখানে কেন? এখানে তো মাছিও আসতে পারে না, কত কত পাহারাদার। তাহলে এই শিশু কিভাবে আসল এখানে। দেখতে দেখতে জেল পুলিশ চলে আসল। জেলার চলে আসল। চলে আসল জেলের ডাক্তার নার্সেরা।সবাই হতবাক। জেলার সাহেব নার্স কে বাচ্চাটাকে পরিস্কার করার নির্দেশ দিলেন। নাড়ী কাটা হল। গোসল করানো হল বাচ্চাটাকে। সন্তানহীন জেলের ঠিক করলো বাচ্চাটাকে সে নিয়ে যাবে। নিজের সন্তান মনে করে উপহার দিবে তাঁর স্ত্রিকে। স্ত্রী নিশ্চয় খুব খুশি হবে।

■ বাচ্চাটাকে পরম মমতায় কোলে নিল জেলার। সবাইকে জানিয়ে দিল এটা তাঁর সন্তান। পা বাড়াল কয়েদখানা থেকে। না না আমি এটা হতে দিব না, সামনে বাধা হয়ে দাঁড়াল ফারুক মাস্টার। কি যেন মনে করে বলে উঠল এটা আমার সন্তান। একে আমি নিয়ে যেতে দিব না। এ আমার কাছেই থাকবে। ফারুক মাস্টার এর কথা শুনে জেলের কয়েদীরা না হেসে পারল না। একজন তো বলেই বসলো, ভাই কাল রাতে বুঝি তুমি বাচ্চা প্রসব করেছ? আহারে কে তোমার এই সর্বনাশ করলো। এই কথা শুনে বাকি কয়েদীরা হেসে গড়িয়ে পড়লো। এমন মজা তারা জেলের ভিতরে আগে কোনোদিন পায়নাই। কেও কেও বলল নারী সঙ্গ না পেয়ে ফারুক মাস্টার পাগল হয়ে গিয়েছে। এখন সে নিজেকে একজন নারী মনে করছে। পেত্নী রেনু অন্ধকার টয়লেটের ভিতর থেকে সব শুনছিল। আর সহ্য করতে না পেরে চিৎকার করে বলে উঠল। ফারুক ঠিক ই বলেছে। এটা ফারুকের ই সন্তান। আমি ওর মা। কিন্তু রেনু হয়তো ভুলেই গিয়েছে, পেত্নীর কথা কেবল ভূত পেত্নীরা শুনতে পায়। ভূত পেত্নীর কথা মানুষে শুনতে পায় না। কেও রেনু পেত্নীর কথা শুনতে পেল না। ফারুক মাস্টার জেলারের পায়ে পড়লো, মিনতি করে বলল স্যার বিশ্বাস করুন আমার মন বলছে এটা আমার সন্তান। প্লিজ একে আমার কাছে রেখে যান। সবাই আবার একসাথে হেসে উঠল। হাসিতে হাসিতে কয়েদখানা যেন বায়েজিখানার রূপ নিল। কোন বাধা না শুনে জেলার সাহেব বাচ্চাটাকে নিয়ে গেলো নিজের বাসাতে। ফারুক মাস্টার কান্নায় ভেঙ্গে পড়লো। তাঁর কান্না দেখে এখন কয়েদখানার বাকি কয়েদীদের কষ্ট হতে লাগলো। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে ফারুক মাস্টার এর এই কান্না কোন পাগলের কান্না নয়। পাগলেরা এভাবে কান্না করতে পারে না। কিন্তু কেও রহস্যটা ভেদ করতে পারল না। এদিকে পেত্নী রেনু আর অন্ধকারে থাকতে পারল না। নিজের জীবন বিপন্ন করে বাইরে চলে আসল। বাইরে আসতেই শরীরে আগুন লেগে গেলো তাঁর। বাঁচাও বাঁচাও বলতে বলতে আবার অন্ধকারে চলে যেটা বাধ্য হল সে।ততক্ষনে শরীরের অর্ধেক পুড়ে ছাই হয়ে গেছে রেনুর। যে সন্তান হারানোর ভয়ে রেনু পেত্নী অন্ধকার শ্যাওড়া বাগানে না ফিরে এই অন্ধকার টয়লেটে থেকে গেলো, কাজের কাজ্জ কিছুই হল না। অবশেষে তাকে জীবন বাঁচাতে সন্তান কে ত্যাগ করতেই হচ্ছে। ফারুক মাস্টার কান্না করতে করতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলল। ডপাত করে পড়ে গেলো কয়েদখানার পাকা মেঝেতে। কে বলেছে সন্তানের প্রতি মায়ের টান একাই থাকে। সন্তানের প্রতি বাবাদের ও গভীর টান থাকে। কে বলেছে সন্তান বিপদে পড়লে কেবল মায়েরা বুঝতে পারে। সন্তান বিপদে পড়লে বাবারাও বুঝতে পারে। সদ্যজাত বাচ্চাটাকে যখন জেলার নিয়ে যাচ্ছিল ফারুক মাস্টার যেভাবে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছে কোন মা এর চেয়ে বেশি কান্না করতো কিনা সন্দেহ আছে। সন্তানের প্রতি ভালবাসার টান একজন ধার্মিক মায়ের যেমন, সন্তানের প্রতি ভালবাসার টান একজন হুজুরের যেমন- সন্তানের প্রতি ভালবাসার টান একজন পতিতা কিম্বা একজন লম্পটের কোন ভাবেই তাঁর চেয়ে কম থাকে না। এটাই জগতের বিধান। একটা ও পতিতা মা খুজে পাওয়া যাবে না যে তাঁর সন্তান কে অস্বীকার করে। যদি কোন লম্পট জানত ঐ পতিতার কোলের সন্তান তাঁর তাহলে সে যতই কঠিন হৃদয়ের মানুষ হোক না কেন নিজ সন্তানকে অস্বীকার করতে পারত না। পুরুষ মানুষ বাহিরে যতই কঠিন দেখাক না কেন সন্তানের প্রতি পিতৃ হৃদয় সর্বদা তুলার মতো নরম। অবশেষে রেনু পেত্নী আর তাঁর গর্ভজাত সন্তানের বাবা ফারুক মাস্টার দুজনেই তাদের সন্তান হারায়ে বাধ্য হয়ে কয়েদখানায় বন্দী হয়ে থাকল।

■ জেলার সাহেবের স্ত্রীর নাম জাহানারা বেগম। সন্তান হয়না বলে সারাদিন মন মরা হয়ে বাসাতেই থাকে, টিভি দেখে, শপিং করে, রাত করে ঘুমায়। প্রায় সময় দেরি করে ঘুম থেকে ওঠে। আজও এর ব্যাতিক্রম হয়নাই। গভীর ঘুমে শুয়ে আছে নরম বিছানায়। কোন শব্দ না করে জেলার সাহেব ঘরের মধ্যে ঢুঁকে দেখে প্রতিদিনের মতো আজো জাহানারা গভীর ঘুমে। আস্তে আস্তে পা টিপে হেটে জেলার চলে আসল স্ত্রীর বিছানার কাছে। গরম কাপড় দিয়ে জড়ানো পেত্নী রেনুর শিশুটাকে শুইয়ে দিল কাত হয়ে শুয়ে থাকা জাহানারা বেগম এর কোলের মধ্যে। তবুও জাহানারা বেগম এর ঘুম ভাঙল না। জেলার সাহেব জাহানারা বেগম এর ঘুম না ভাঙ্গিয়ে চলে গেলো শিশুটার জন্য দুধ কিনতে।
যৌবতী পেত্নীর মন পর্ব : তিন Bangla Golpo যৌবতী পেত্নীর মন পর্ব : তিন Bangla Golpo Reviewed by Unknown on September 27, 2018 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.